লাশের গাড়ি অনেক ভারী

 লাশের গাড়ি অনেক ভারী

পথে যেন আর ফুরায় না আর মনেরও ভয় কাটে না।

2006 সালের জুলাই মাসের 6 তারিখ। আমার খালতো ভাই নাম রাজু। ও ক্যান্সার রোগে মারা গিয়েছিল

আজ ওর মৃত লাশ নিয়ে বাড়ি যাবার সময়ে ঘটনাগুলো বর্ণনা করব।

সেদিন ছিল শুক্রবার সকালে ও মোটামুটি সুস্থ।

আমি  ঘরে বসে টুকিটাকি কিছু কাজ করতে ছিলাম।

তখন হঠাৎ দশটা আনুমানিক সকাল মা বলতেছে রাজু খুব অসুস্থ। আমরা তারাতারি ওরে পিজি হাসপাতালে নেওয়ার জন্য একটা সিএনজি ভাড়া করে আনলাম।

ওকে নিয়ে সিএনজিতে করে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য উদ্দেশে রওনা হলাম ততক্ষণে  জুম্মার নামাজ শুরু হয়ে গেছে।

ওরে নিয়া শেওড়াপাড়া পর্যন্ত আমরা গিয়েছি তখনি ও বলতেছে আমার মাকে খালা আর সহ্য হচ্ছে  না আমার নিঃশ্বাস নিতে খুবই কষ্ট হচ্ছে এটাই ছিল ওর শেষ কথা

তারপর আমরা  সিএনজি ড্রাইভারকে বললাম গাড়ি ঘুরাও

ঘুরিয়ে বাসায় চলে এলাম।

তারপর আমরা চেষ্টা করলাম ওরে গোসল করাইয়া বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য।

কিন্তু তখন ঘটলো আরেক রহস্যময় কাহিনী।

গোসল করানোর জন্য হুজুরের কাছে যায় প্রথমে যে হুজুর আমার ভাই মারা গেছে তারে গোসলের জন্য তাই এসেছিলাম। হুজুর জিজ্ঞেস করে কিভাবে মারা গেল।

তোরে বললাম যে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে  মারা গেছে। আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসতেছি।

কিন্তু অনেক সময় চলে গেলে কিন্তু হুজুরের দেখাই নাই।

তারপর আবার আমরা হুজুরের খুঁজতে গেলে কিন্তু হুজুরের কোন দেখা নেই। তারপরে আমাদের এলাকার সাধারণ কিছু লোক আছে যারা পুরুষ মারা গেলে গোসল করাই তার কাছে গেলাম।

সে যখন শুনলো যে ক্যান্সার রোগী মারা গেছে সে বলে আমি গোসল করাতে পারবো না।

তখন আমরা নিরুপায় হয়ে চিন্তা করলাম যে গোসল  ছাড়াই আমরা দেশে নিয়ে যাব। আমরা একটা পিকআপ ভাড়া করলাম।

তো সবকিছু জোগাড়  করতে পিকআপ তারপর একটা বক্স কাফনের কাপড় সব জোগাড় করতে করতে সন্ধ্যা ছয়টা আনুমানিক বেজে গেল।সেদিনটি ছিল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আমাদের গাড়ি ছাড়লো সন্ধ্যা ছয়টায় গুড়গুড়ি হঠাৎ করে বৃষ্টি হতে লাগল। তখন রাস্তায় বৃষ্টি দেখে ড্রাইভার খুব স্লো ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিল। তো আমরা এভাবে কাঁচপুর ব্রিজ পার হয়ে গেলাম। ড্রাইভার দেখি খুব অস্তে গাড়ি চালাচ্ছে গাড়ি চালাচ্ছে ড্রাইভারকে বললাম যে এত স্লো কেন গাড়ি চালাচ্ছেন। উনি বললো বৃষ্টি তো তাই আস্তে চালাচ্ছে। তারপর গাড়ি গতিতে চলছে দুর্বার গতিতে গাড়ি চলছে। হঠাৎ করে একটি বিকট শব্দে মনে হলো যেন গাড়ির ডিফেন্স আর ভেঙে পড়েগেছে।আমরা গাড়ি থেকে নামলাম নেমে দেখি কিছুই হয়নি সুন্দর মতনই গড়ি চলছে আবার। তারপর আবার গাড়ি চলছে তখন আনুমানিক তিনটার মতো হবে। আমরা দুর্বার গতিতে চলার পথে হঠাৎ করেই যে পথে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে না গিয়ে শর্টকাট পথ খোঁজার চিন্তা করে ড্রাইভার।যে পথে গাড়ি টানতে শুরু করলো সেটা গ্রামের চিকন রাস্তাগুলো দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল। ভয় থাকলে আসলে যা হয় আরকি তাই হলো।কিছুদূর গাড়ি যেতেই ছোট্ট একটা খালের উপরে ব্রিজ অনেকদিন ব্যবহার না করায় ব্রিজের মাঝখানে ভাঙ্গা । অবশ্য দুই সাইট একদম ভালো কিন্তু মাঝখানে ছোট ছোট বড় বড় গর্ত হয়ে আছে।ড্রাইভার তো না দেখে গাড়ি  উঠেছে আর মাত্র এক ফিট এর  মতন জায়গায় গেলে গাড়ি। গর্তে পড়ে যেত।যাইহোক ড্রাইভার কোনরকম ফলো করতে পারায় যে গাড়ি গর্তে পড়ে নাই এখন।যদি আমাদের গন্তব্য থেকে প্রায় তখনও 10 থেকে 15 কিলোমিটার দূরত্ব ছিল।এখন ড্রাইভার তার ইচ্ছেমত সেআর সামনে যাবেনা তার তো এমনিতেই ভয়ে আতঙ্কিত।আমরা বললাম তা তো হবে না আমাদের গন্তব্যে আমাদের একটু পৌঁছে দিতে হবে।এনিয়ে তর্কাতর্কি হয়ে গেল তখন আশেপাশে।কিছু লোক এলো তারাও বলল এরা এখান থেকে কিভাবে যাবে এতদূর।তখন অনেক মানুষের চাপে ড্রাইভার আবার খুব চেষ্টা করে ব্রিজ এর উপর দিয়ে গাড়ি    নিয়ে বাইরে গেল। তারপর আমাদেরকে  গন্তব্যে নামায়া দিল।তখন আমি ড্রাইভারকে বললাম রাত তো অনেক হইছে এখন আপনি আর যাইয়েন না সকালে আপনি গাড়ি নিয়ে চলে যান। ড্রাইভার আমার কথা কান দিলো না। সে বলল চলে যেতে পারবো সমস্যা নেই। কিন্তু আমি কিছু বুঝলাম যে তার ভিতরে অতিরিক্তভাবে ভয় কাজ করতেছিল। পরদিন সকালে শুনি আমাদের গন্তব্য থেকে কিছু দূরে একটি পিকআপ উল্টে পড়ে আছে সেখানে যেয়ে দেখি ড্রাইভার হেলপার তারা গাড়িটারে উঠানোর চেষ্টা করতে ছিল তখন আমি ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলাম কিভাবে হলোড্রাইভার কইলো হালকা কুয়াশা ছিল তো অচেনা রাস্তা তাই এ বিপদ হলো।। ভাল থাকবেন সবাই

।